একটা নিস সাইটের সাকসেস সবচেয়ে বেশি নির্ভর করে কোথায় জানেন?
আমার মতে সেটা অবশ্যই অনপেজে নিহিত। যদিও এর আগে আমি নিস সাইটের বেসিক লিংক বিল্ডিং নিয়ে লিখেছিলাম। কিন্তু আমি স্বীকার করছি (আগেও অনেক জায়গায় বলেছি), যদি একটা সাইটের অনপেজ ঠিক না থাকে তাহলে সেটা নিয়ে আগানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
কেন এ কথা বলছি?
এই লেখাটা যখন পড়া শেষ করবেন, তখন আপনারও সেটা মনে হবে। সুতরাং লেখাটা মনোযোগ দিয়ে পড়ার আহবান জানাই।
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: লেখাটা শুধুমাত্র নতুনদের জন্য। নতুনদের উপযোগী করে লেখা। আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতার আলোকে। এক্সপার্ট মার্কেটারদের অনুরোধ করবো এটা পড়ে সময় নষ্ট করার কিছু নেই। স্কিপ করে যান, প্লিজ!

কেন এই লেখা?
আমাদের দেশের বেশিরভাগ ভাই ব্রাদার নিস একটা নিস সাইট করতে গিয়ে যে ভুলটা করেন সেটা হচ্ছে- নিস সাইট মানে হচ্ছে ডোমেইন-হোস্টিং কেনা এবং অনেকগুলো আর্টিক্যাল দেয়া তারপর ব্যাকলিংক শুরু করা। যতো বেশি ব্যাকলিংক র্যাংক হওয়ার পরিমাণ ততো বেশি।
কিন্তু আসলেই কি তাই?
আমি বলবো – না!
এটা সম্পূর্ণ ভুল একটা পদ্ধতি। একটা ছোট্ট উদাহরণ দিয়ে বিষয়টা আপনাকে ব্যাখ্যা করা যায় এভাবে: বাংলা একটা প্রবাদ আছে- গাছের গোড়া কেটে আগায় পানি ঢালা। বিষয়টা কি আপনাকে ক্লিয়ার করতে পেরেছি?
অর্থাৎ একটা নিস সাইটের অনপেজ ঠিক না করে অফপেজ তথা লিংক বিল্ডিং শুরু করার মানে হচ্ছে- আপনি একটা গাছের গোড়া কেটে সেটাকে পানি দিয়ে তাজা করতে চাচ্ছেন। কিন্তু সেটা কি সম্ভব? গাছ বাঁচবে? নাকি মরে যাবে? হুম, মরে যাবে। যতোই পানি ঢালেন লাভ হবে না।
সুতরাং সবার আগে আমাদেরকে যেটা করতে হবে, গাছ ভালোভাবে লাগাতে হবে। কাটা যাবে না। তারপর সেখানে পানি, সার, সেবা-শুশ্রূষা যতো ইচ্ছা করবেন। তাহলে গাছ তরতাজা হবে।
দ্বিতীয় আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে- অনেক ভাই উপরের পদ্ধতিতে সাইট করার পর প্রচুর ব্যাকলিংক করেও যখন সাইট র্যাংক করাতে পারেন না, তখন ইনবক্সে নক করেন- ভাই, আমার সাইটটার কী সমস্যা একটু দেখে দেবেন, প্লিজ?
এক সময় প্রচুর সাইট অডিট করে দিয়েছি। আমাজন এফিলিয়েট বাংলাদেশ ফেসবুক গ্রুপের অনেক ভাইয়ের সাইট-ই আমি অডিট করে দিয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ। কি কি ভুল আছে এবং কি কি করতে হবে তার বিশাল লিস্ট ধরে ৫-২০ পৃষ্ঠার পিডিএফ ফাইল আকারে অডিট রিপোর্ট দিয়েছি। বলাই বাহুল্য কোনোরকম পারিশ্রমিক ছাড়াই। একেকটা রিপোর্ট তৈরি করতে আমার ৪-১২ ঘণ্টা সময় লাগতো।
দুঃখজনক হলেও সত্যি, হাতেগোণা কয়েকজন মাত্র পরবর্তীতে আপডেট জানিয়েছেন। যাহোক, সেটা নিয়ে মাথা ঘামাই না।
যে কারণে এ কথা বলা, সেটা হচ্ছে- মূলত অনপেজ এসইওটা যদি কেউ ভালো করে দেখেন, তাহলে তার সাইটের সফলতা কীভাবে বেড়ে যায় সেটাই আমরা বুঝতে চেষ্টা করছি। অর্থাৎ এই লেখাটা আপনাকে গাইডলাইন দেবে, আপনার নিস সাইট সঠিক পথে আছে নাকি কয়েকদিন পরে সমস্যায় পড়তে যাচ্ছেন চলুন, আরেকটু সামনে যাই।
অনপেজের ফ্যাক্টরগুলো কি কি?
এখন এক নজরে দেখে নেবো, অনপেজ এসইওর কোন কোন ফ্যাক্টরগুলো নিয়ে আমরা কথা বলবো? প্রথমে লিস্ট আকারে দিচ্ছি, তারপর সেগুলো নিয়ে একটু বিস্তারিত বলবো, ইনশাআল্লাহ।
- কীওয়ার্ড
- পারমালিংক/আর্টিক্যাল ইউআরএল
- মেটা ডেসক্রিপশন
- ইউআরএলের দৈর্ঘ্য
- এইচ-ট্যাগের ব্যবহার
- আর্টিক্যালে কীওয়ার্ডের ব্যবহার
- এক্সটার্নাল লিংক
- ইন্টারনাল লিংক
- ইমেজ অল্টার ট্যাগ
- সাইটের ইউআই/ইউএক্স
- রেসপনসিভ সাইট
- স্পীড অপটিমাইজেশন
- সিকিউর্ড সকেটস লেয়ার
- অ্যাঙ্গেজিং আর্টিক্যাল
- আর্টিক্যাল কোয়ালিটি
- আর্টিক্যাল স্ট্রাকচার
- রিডিং ফ্রেন্ডলি আর্টিক্যাল
- আর্টিক্যালের দৈর্ঘ্য
- টেবিল অব কনটেন্ট
- রিচ কনটেন্ট
- কীওয়ার্ড ভ্যারিয়েশন
- আর্টিক্যালে গ্রামাটিক্যাল সমস্যা
- আই-রিলিজ আর্টিক্যাল
মোটামুটি এই-ই! চলুন এখন এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলি। আশা করি আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।
কীওয়ার্ড
অনপেজের প্রধান বিষয় হচ্ছে কীওয়ার্ড। একটা ওয়েবসাইটের মূল বিষয়ও এটাই। এটাকে কেন্দ্র করেই অন্যান্য বিষয়গুলো ডেভেলপ হবে- আর্টিক্যাল, আর্টিক্যাল স্ট্রাকচার, ইন্টারলিংক, আউটবাউন্ড লিংক… সবকিছু।
সুতরাং কীওয়ার্ড সিলেকশন/রিসার্চে এই বিষয়টা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। কিন্তু যেহেতু এই আর্টিক্যালটা কীওয়ার্ড রিসার্চ সংক্রান্ত না, তাই এখানে আর এই বিষয়ে কথা বলা হচ্ছে না। বরং আর্টিক্যালে কীওয়ার্ডটা কীভাবে ইউজ করা হবে সেটা এখানে মেনশন করা যাক।
একটা সময় ছিলো যখন একটা আর্টিক্যালে কীওয়ার্ড যতো বেশি ব্যবহার করা হবে, ততই ভালো ছিলো র্যাংক করার জন্য। তারপর শুরু হলো রেশিও কাউন্ট করা। কারণ দেখা গেলো একটা আর্টিক্যালে ফোকাস কীওয়ার্ড বেশি হলে সেটাকে ওভারঅপটিমাইজ ধরা হয়। তাই এক হাজার ওয়ার্ডের একটা আর্টিক্যালে এক বা দুইবার দেয়া শুরু হলো।
কিন্তু গুগল র্যাংক ব্রেইন আপডেট আসার পর এই রেশিও সিস্টেমও “রহিত” হয়ে গেলো। দেখা গেলো, গুগল এখন আর ফোকাস কীওয়ার্ড টার্গেট করে একটা আর্টিক্যালকে র্যাংক দেয় না। সম্পূর্ণটাই চলে গেছে অডিয়েন্সের চাহিদা/আগ্রহরে উপর।
বর্তমানে এরকম অনেক আর্টিক্যাল দেখা যায়, যে কীওয়ার্ডের জন্য গুগল সেটাকে র্যাংক করেছে সেই কীওয়ার্ড পুরো আর্টিক্যালেই নাই। এটা কীভাবে সম্ভব? সম্ভব র্যাংক ব্রেইনের কারনে। সুতরাং আর্টিক্যালে ফোকাস কীওয়ার্ডের চেয়ে অন্যদিকে যেমন এলএসআই এবং ভ্যারিয়েশনের দিকে নজর দিতে হবে বেশি। পাশপাশি আর্টিক্যাল কোয়ালিটির উপর তো অবশ্যই।
উল্লেখ্য, আর্টিক্যাল কোয়ালিটি বলতে এখানে বলা হচ্ছে না যে, লেখাটা নেটিভ রাইটার দ্বারা লেখাতে হবে। নাহ, বিষয়টা এমন না। কোয়ালিটি আর্টিক্যাল বলতে বুঝানো হয়েছে- লেখাটা সুখপাঠ্য হতে হবে। কঠিন বাক্যবিন্যাসে হাই কোয়ালিটি হওয়ার দরকার নাই।
লেখাটা হবে সহজবোধ্য এবং রিডারফ্রেন্ডলি। এটাকেই বলবো কোয়ালিটি আর্টিক্যাল।
পারমালিংক/আর্টিক্যাল ইউআরএল
আর্টিক্যালটার পারমালিংক বা ইউআরএলটা অবশ্যই এসইও-ফ্রেন্ডলি হতে হবে। কারণ এটাকে সার্চ ইঞ্জিন বট রিড করে। রিড করে বুঝতে পারে লেখাটা কোন বিষয়ে? সুতরাং এটা অবশ্যই খেয়ালে রাখতে হভে।
অনেকেই আর্টিক্যালের পুরো টাইটেল দিয়ে দেয় পারমালিংকে। এটা অনেকে করে না জেনে। কারণ টাইটেলে যা লেখা হয় অটো সেটা লিংকে চলে যায়। ফলে অনেক আর্টিক্যালের ইউআরএলে দেখা যায় “২০১৯”, অর্থাৎ সালটাও থেকে যায়।
সো এই বিষয়টা খেয়াল রাখঅ জরুরি।
মেটা ডেসক্রিপশন
গুগল এখন এতো স্মার্ট হয়ে গেছে যে, প্লাগিন দিয়ে কিংবা অন্য কোনো উপায়ে একটা আর্টিক্যালে যে মেটা ডেসক্রিপশন দেয়া হয় সেটাকে আর রিড করে না। না, কথাটা হলো না। হয়তো রিড করে, কিন্তু ক্যাপচার করে না। ক্যাপচার করে তার নিজের পছন্দমতো বিষয়। ইয়োস্ট প্লাগিন বা অন্য কোনো প্লাগিন দিয়ে এই কাজটা এখন আর করা যাচ্ছে না।
কিন্তু তাই বলে কি আমরা একটা আর্টিক্যালে মেটা ডেসক্রিপশন দেবো না?
অবশ্যই দেবো। আমাদের দেয়াটা আমরা অবশ্যই দেবো। তারপর গুগল যা করার করুক। কারণ, গুগল ক্যাপচার না করতে পারে, কিন্তু রিড তো করে নিশ্চয়। সুতরাং এটা মাথায় রাখতে হবে। আমরা আমাদের কাজ পারফেক্টলি করে যাবো।
ইউআরএলের দৈর্ঘ্য
একটা আর্টিক্যালের পার্মালিংক কিংবা ইউআরএল নিয়ে কথা হচ্ছে এখানে। ইউআরএলে ডোমেইনের নামও থাকে। সুতরাং ডোমেইন কেনার সময়েই মাথায় রাখতে হবে যেন দীর্ঘ না হয়। এক্সপার্টদের মতে ১৫ ক্যারেক্টারের মধ্যে ডোমেইনের নাম রাখা ভালো।
ডোমেইনের পরের অংশটা হচ্ছে ঐ নির্দিষ্ট আর্টিক্যালের লিংক। ওটা কীভাবে কনট্রোল করবেন? কেন করবেন?
কন্ট্রোল করবেন আর্টিক্যাল পোস্ট করার সময়। আর কন্ট্রোল করবেন, কারণ হচ্ছে- যতো শর্ট হবে এটা, ততোই এসইও-ফ্রেন্ডলি হয় ব্যাপারটা। এটা একেবারে প্রমাণিত। ইদানিং অনেক বড় বড় সাইটে দেখা যায়, এই ইউআরএলে “বেস্ট” শব্দটাও অনেকে ইউজ করে না।
তবে আমার নিজের অভিজ্ঞতা বলে এখানে কীওয়ার্ডটাকে রাখলে ভালো। আপনার কীওয়ার্ড যদি হয় “বেস্ট মডেল বাংলাদেশ” তাহলে ফুল ইউআরএল হতে পারে এরকম: https://yourdomain.com/বেস্ট-মডেল-বাংলাদেশ/।
তবে আপনার যদি কনফিডেন্ট লেভের ভালো থাকে, এবং হিউজ অভিজ্ঞতা থাকে এবং থাকে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, তাহলে সঠিক সিলো স্ট্রাকচার ব্যবহার করুন এবং লিংক থেকে “বেস্ট” শব্দটাকে মাইনাস করতে পারেন।
এইচ-ট্যাগের ব্যবহার
একটা আর্টিক্যাল এসইও-ফ্রেন্ডলি করে সাজানোর জন্য অত্যন্ত জরুরি বষয়। তাই এইচ-ট্যাগের ব্যবহার ভালোভাবে করাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এইচ-ট্যাগের ব্যবহার কি জটিল কিছু? আমার মনে হয় না।
হুম, আমার মনে হয় না এটা জটিল কিছু। বিশেষ করে আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেসের লেটেস্ট ইউজার হয়ে থাকেন, তাহলে গুটেনবার্গ এডিটর ইউজ করে বিষয়টা আরও সহজ করে করতে পারেন। তারপরও কোনো কনফিউশন থাকেল উপরের এইচ-ট্যাগ নিয়ে লেখাটা পড়ে নিতে পারেন। আশা করি এইচ-ট্যাগ নিয়ে আপনার যাবতীয় ভ্রান্ত ধারণা দূর হয়ে যাবে।
আর্টিক্যালে কীওয়ার্ডের ব্যবহার
এই বিষয়টা নিয়ে অলরেডি বলে ফেলেছি উপরে। এখানে আরেকটু বিষয় যোগ করি। একটা আর্টিক্যালে ঐ আর্টিক্যালের কীওয়ার্ড ব্যবহার করা জরুরি না। যদি ওভারঅল আর্টিক্যালটা ঐ কীওয়ার্ডকে নির্দেশ করে তাহলেই হয়। এটাই সবচেয়ে ভালো ওয়ে। এটা যদি স্মার্টলি করতে পারবেন রাইটার আপনার আর্টিক্যাল গুগলের কাছে ততই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ধরা দেবে।
তবে কেউ চাইলে ইনট্রোতে ব্যবহার করতে পারেন কীওয়ার্ড। কোনো বাধা নেই। কিন্তু অবশ্যই একটা আর্টিক্যালে ২/৩ বারের বেশি এক্সাক্ট ম্যাচ কীওয়ার্ড ইউজ না করা বুদ্ধিমানের কাজ। তা আপনার আর্টিক্যাল যতো বড়-ই হোক না কেন!
এক্সটার্নাল লিংক
আউটবাউন্ড লিংক বা এক্সটার্নাল লিংক একটা আর্টিক্যালে থাকা দোষের কিছু না। তবে ইয়োস্ট প্লাগিন ভায়ের কথা ফলো করে বাধ্যতামূলক দেয়াটা জরুরি না। তবে অবশ্যই যেন অথোরিটি সাইটের হয় সেটা লক্ষ্য রাখা জরুরি। এক্সটার্নাল লিংকের জন্য উইকিপিডিয়া, গুগল স্কলার কিংবা ইউএস রিসার্চ সেন্টার রিলেটেড কোনো সাইট যেন হয়।
এমন কোনো সাইটকে এক্সটার্নাল লিংক না দেয়াই বেটার যারা আমাজন এফিলিয়েট প্রোগ্রাম ইউজ করে তাদের সাইটে। এবং অবশ্যই এই এক্সটার্নাল অথোরিটি লিংকটা ডুফলো রাখবেন।
ইন্টারনাল লিংক
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় ইন্টারলিংক। একটা সাইটের সিমিলার আর্টিক্যালগুলো পরস্পরের সাথে লিংক করে এটা করা হয়। এতে করে সাইটের অথোরিটি সহজে বাড়ে। যদি নির্দিষ্ট ক্যাটাগরি ফলো করে নির্দিষ্ট নিয়মে ইন্টারলিংক করা হয় তাহলে সেটা একটা আলাদা অর্থ হয়- সিলো বলা হয় একে।
সিলো একাধিক নিয়মে হয়ে থাকে। তবে এটা যে যতো ক্লেভারলি করতে পারে, তার সাইটের অবস্থান ততোই ভালো হয়। আমি নিজে আমার সাইটে সিলো স্ট্রাকচার ফলো করি। অবশ্যই ক্যাটাগরিওয়াইজড সিলো ফলো করি আমি।
যদিও অনেক এসইও এক্সপার্ট সিলো নিয়ে তেমন মাথা ঘামান না। তারাও যে অসফল তা নয়। এটা যার যার পারফেকশন। আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় তাই আমি করি। আপনার কাছে মনে না হলে আপনি করবেন না। দ্যাটস অল!
সিলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই আর্টিক্যালটা পড়তে পারেন: https://www.bruceclay.com/seo/silo/ । আমার দৃষ্টিতে সিলো নিয়ে এরাই সবচেয়ে সহজে বলেছেন।
এবার আসি ইন্টারলিংক নিয়ে। সিলো করবেন কি করবেন না সেটা আপনার বিষয়। তবে ইন্টারলিংক না করলে বিষয়টা র্যাংকে প্রভাব পড়বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এজন্য ইন্টারলিংক আপনাকে করতেই হবে। এজন্য আপনি দু’টো পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন:
১। ইনফো আর্টিক্যাল থেকে বায়িং গাইডকে লিংক দিতে পারেন
২। ইনফো এবং বায়িং গাইড পরস্পরকে লিংকআপ করতে পারেন।
যা-ই করেন না কেন, একটা বিষয় দুই ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। সেটা হচ্ছে- ইন্টারলিংক করার ক্ষেত্রেও অ্যাংকর টেক্সট ভেরিয়েশন রাখতে হয়। এক্সাক্ট ম্যাচ কীওয়ার্ডকে অ্যাংকর টেক্সট হিসেবে ইউজ না করাই ভালো। কারণ গুগল এই বিষয়টা পছন্দ করে না। ইন্টারলিংকের অ্যাংকর টেক্সট তাই অবশ্যই চিন্তা-ভাবনা করে দিতে হবে।
এমনভাবে দিতে হবে, যেন রিডার উইলিংলি অ্যাংকর টেক্সটে ক্লিক করে। হা, এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ইন্টারলিংক শুধুমাত্র রিডারের জন্যই করা হয় না। সার্চ ইঞ্জিন বটকেও নির্দেশনা দেয়া হয় ফলো করার জন্য। দু’টোই গুরুত্বপূর্ণ। তবে একটু পার্থক্য আছে দু’টোর মধ্যে:
১। যে অ্যাংকরে ইউজার ক্লিক করবে সেটাতে সার্চ ইঞ্জিন বট ইন করতে বাধ্য 😉
২। কিন্তু যেটাতে ইউজার ক্লিক করবে না, সেটাতে বট না-ও যেতে পারে।
সো বি কেয়ারফুল!
উদাহরণ হিসেবে এভাবে বলা যায়: আপনি হেডফোন নিয়ে একটা আর্টিক্যাল লিখেছেন। সেখানে অ্যাংকর টেক্সট দিলেন “how to”। এখানে একজন ইউজারকারী কেন ক্লিক করবে? কোনো কারণ দেখি না আমি। আপনি যদি ইউজকারকারী হতেন ঐ সাইটের তাহলে এই অ্যাংকরে ক্লিক করতেন? যদি আর্টিক্যালের কোথাও অ্যাংকর টেক্সট থাকে “headphone installation” তাহলে কিন্তু একজন রিডাল সহজে ক্লিক করবে। কারণ তিনি কিন্তু আপনার ওয়েবসাইটে এসেছেন কিছু পড়ার জন্যই। আপনি এই অ্যাংকরের মাঝেও ভেরিয়েশন আনতে পারেন এভাবে- “install headphone” কিংবা “how to install headphone”। তাই না?
এরকম বিষয়গুলো যদি একটু খেয়াল করেন তাহলে দেখবেন খুব সহজেই অ্যাংকর টেক্সটের মাঝে ভেরিয়েশন আনা সম্ভব। যেটা কিনা আপনার সাইটের নজ্য একটা পজেটিভ দিক বয়ে আনতে পারে সহজে।
ইমেজ অল্টার ট্যাগ
একটা কমন ইস্যু। অনপেজে অনেকেই এই ভুলটা করে থাকেন। সাইটে ইমেজ ব্যবহার করেন কিন্তু সেটাতে অল্টার ট্যাগ ইউজ করেন না। অল্টার ট্যাগ ইউজ করা অত্যন্ত জরুরি। ছোট্ট এই কাজটা না করলে সার্চ ইঞ্জিন এখানে বড় ধরণের এরর শো করে।

সাইটের ইউআই/ইউএক্স
যারা ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কে জানেন, তারা ইউআই/ইউএক্স সম্পর্কে জানেন। আর যারা এসইও নিয়ে ডিপ লেভেলের পড়াশোনা করেন, জানেন, তারাও এই ব্যাপারটা সম্পর্কে জানার কথা।
ইউআই মানে ইউজার ইন্টারফেস এবং ইউএক্স মানে ইউজার এক্সপেরিয়েন্স। একটা ওয়েবসাইটের ভিজ্যুয়াল যে অংশ আমরা দেখি সেটাই ঐ ওয়েবসাইটের ইন্টারফেস। এই ইন্টারফেস বা লুক যতো সুন্দর এবং আকর্ষণীয় হয়, অডিয়েন্সকে ততো আকর্ষণ করে। আর অডিয়েন্স যতো আকর্ষিত করে, সেই ওয়েবসাইটের ভ্যালু ততোই বেশি। এ কথা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
ইউএক্স বা ইউজার এক্সপেরিয়েন্স হচ্ছে একজন ট্রাফিক একটা ওয়েবসাইটে এসে কত সহজে ওয়েবসাইটটা ইউজ করতে পারছে বা পারছে কিনা সেটা। ইউএক্স যতো ভালো হবে ঐ সাইটের গ্রহণযোগ্যতা ততো বেশি হবে।
তো এই বিষয়গুলো অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। অনেকটাই এগুলো এসইও’র সাথে জড়িত। সো গুরুত্ব দিতে হবে এই ক্ষেত্রেও।
রেসপনসিভ সাইট
যদি আপনার নিস সাইট ওয়ার্ডপ্রেস সিএমএস দিয়ে হয়, তাহলে আপনার সাইট অবশ্যই রেসপনসিভ। কারণ ওয়ার্ডপ্রেসের সব থিমই এখন রেসপনসিভ ডিজাইনে করা। দুয়েকটা হয়তো রেসপনসিভ না হতে পারে। সেগুলো হিসেবের বাইরে।
সাইট রেসপনসিভ না হলে সেটা মোবাইল অপটিমাইজড হয় না।
ওয়েট!
প্রথমে রেসপনসিভ বিষয়টা ব্যাখ্যা করছি- রেসপনসিভ হলো, আপনার সাইট যে ডিভাইসেই ওপেন করা হোক না কেন সেটা ঐ ডিভাইসে সুন্দরভাবে শো করবে। সাইট অর্ধেক দেখা যাবে আর অর্ধেক স্ক্রল করতে হবে ডানে-বামে, এরকম হবে না।
স্পীড অপটিমাইজেশন
একটা গুরুত্বপূর্ণ এসইও ফ্যাক্টর হচ্ছে সাইটের স্পীড। সাইটের স্পীড ভালো না হলে সেটা র্যাংকিংয়ে প্রভাব পড়ে। এজন্য অবশ্যই ভালো মানের হোস্টিং নিস সাইটের জন্য দরকার। তবে এ কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, সাইটের স্পীড শুধুমাত্র হোস্টিংয়ের উপর নির্ভর করে না। আরও অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে।
তাই একটা সাইটের স্পীড বাড়ানোর জন্য অবশ্যই সাইটের স্পীড অপটিমাইজেশন করতে হয়। যেমন টেক্সট এবং কোড রেশিও ঠিক রাখা। ইমেজ অপটিমাইজ করা। সিএসএস এবং জেএস অপটিমাইজ করাসহ আরও কিছু কাজ।
জিটি মেট্রিক্স দিয়ে চেক করে সেখানের দেয়া ডিরেকশন অনুযায়ী গুগলে সার্চ করে খুব সহজেই একটা সাইটের স্পীড অপটিমাইজ করা যায়। সাইটের স্পীড ৮০+ হলে চলে। তবে ৯০+ করতে পারলে আর চিন্তার কিছু থাকে না। সামান্য দুয়েকটা কাজ করলেই সেই স্পীড অর্জন করা সম্ভব।
সিকিউর্ড সকেটস লেয়ার
আমরা যাকে সহজ ভাষায় এসএসএল বলি, সেটারই ফুল মিনিং সিকিউর্ড সকেটস লেয়ার। এটা একটা এসইও ফ্যাক্টর। সুতরাং অব্যশই আপনার ডোমেইনে ডিভি এসএসএল বা পজেটিভ এসএসএল একটিভ করা নেয়া ভালো।
উল্লেখ্য, এসএসএল বিষয়টা হোস্টিং রিলেটেড। এখন বেশিরভাগ হোস্টিং কোম্পানীই এসএসএল ফ্রি অফার করে। সুতরাং হোস্টিং কেনার সময় এই বিষয়টা অবশ্যই চেক করবেন।
অ্যাঙ্গেজিং আর্টিক্যাল
আর্টিক্যালের কথা আসলেই প্রথমে যে কথাটা আসে, সেটা হচ্ছে- কনটেন্ট ইজ কিং। তাই অনেকে নেটিভ নেটিভ করে চিল্লান। বিষয়টা নেটিভ রিলেটেড না। ধরুন বাংলা ভাষার কথাই যদি বলি- সব বাংলাদেশী-ই কি ভালো বাংলা লিখতে পারেন? আমরা লেখার সময় অনেকেই যা লিখি তা ভুল গ্রামার ভর্তি। তার মানে কি? বাংলায় আমরা নেটিভ হয়েও ভালো করতে পারছি না।
অবশ্য অনেক স্ট্যাটাস দেখবেন, তিনি কোনো লেখক নন, কিন্তু চমৎকার সব গল্প লিখছেন। স্ট্যাটাস পড়ে ভালো লাগছে। একটু পড়া শুরু করলে আরও পড়তে ইচ্ছা করে। আমি একজনের প্রোফাইল লিংক দিতে পারি, তিনি বাংলাদেশের কোনো লেখক নন, কিন্তু তাঁর একটা স্ট্যাটাস পড়ার সাথে সাথেই আপনি আরও পড়তে চাইবেন।

তার মানে হচ্ছে- লেখাটা লিখতে হয় অডিয়েন্সের ভালো লাগার মতো করে। শুধু কঠিন-কঠিন শব্দ দিয়ে নির্ভুল বাক্য রচনা করে গেলেই হয় না। তো এই বিষয়টা মাথায় রাখতে পারলে আপনার সাইট পজেটিভ দিকে মুভ নিতে দেরি হবে না। আর কনভার্সন রেটও হবে খুব ভালো।
আর্টিক্যাল কোয়ালিটি
আর্টিক্যাল কোয়ালিটিও একটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে কোয়ালিটি ব্যাপারটা কি সেটা সবার আগে মাথায় রাখতে হবে। কোয়ালিটি মানে হচ্ছে বঙ্কিমচন্দ্রের ব্যাখ্যা দেয়ার মতো। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন- “যাহা পড়িবামাত্রই বুঝতে পারা যায় তাহাই উৎকৃষ্ট রচনা”। সুতরাং আশা করি ভালো কনটেন্ট মন্দ কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মনে আর কোনো কনফিউশন থাকবে না।
আর্টিক্যাল স্ট্রাকচার
আমার কাছে আর্টিক্যাল স্ট্রাকচার বিষয়টা অনেক অনেক গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়। একটা সুন্দর চমৎকার তথ্যবহুল আর্টিক্যাল সহজেই মাঠে মারা যেতে পারে যদি না সেটা সুন্দরভাবে সাজানো হয়। এই বিষয়টা নিয়ে আলাদা করে পোস্ট লেখার ইচ্ছা আছে। তাই আপাতত এখানেই ইতি টানছি।
রিডিং ফ্রেন্ডলি আর্টিক্যাল
অ্যাঙ্গেজিং আর্টিক্যাল আর রিডিং ফ্রেন্ডলি আর্টিক্যাল কথা দু’টি প্রায় সমার্থক। অর্থাৎ আর্টিক্যালটা কতটা গ্রামার এরর ফ্রি সেটার চেয়ে আর্টিক্যালটা পড়তে কেমন লাগছে, অডিয়েন্স আর্টিক্যালটা পড়ে বুঝতে পারছেন কিনা, সহজবোধ্য কিনা সেটাই প্রধান বিবেচ্য বিষয়।
তাই গদবাধা নিয়মে আর্টিক্যাল নয়, বরং রিডিং ফ্রেন্ডলি করে লেখা আর্টিক্যালের গুরুত্বই বেশি।
আর্টিক্যালের দৈর্ঘ্য
আর্টিক্যালের দৈর্ঘ্যটা গুরুত্বপূর্ণ আপনার কমপিটিটরের সাথে বিবেচনা করে। তবে সাধারণত বায়িং গাইডগুলো তিন হাজার প্লাস শব্দ এবং ইনফরমেটি আর্টিক্যালগুলো সাতশত প্লাস হলেই চলে।
আর্টিক্যালের দৈর্ঘ্যটা সবসময় গুরুত্বপূর্ণ হয় না। এটা সম্পূর্ণই নির্ভর করে আপনার সিলেক্টেড কীওয়ার্ডের উপর। ধরুন, আপনার যে কীওয়ার্ড, সেটাতে ঐরকম তথ্যই নাই। তো অযথা সেই কীওয়ার্ড দিয়ে পাঁচ হাজার ওয়ার্ড লেখার তো কিছু নাই। ঘুরেফিরে একই কথা চলে আসবে।
নিজের অভিজ্ঞতা: আমি একবার এক রাইটারকে ইনস্ট্রাকশন দিলাম বায়িংগাইড লেখার জন্য। প্রতিটা তিন হাজার ওয়ার্ড করে। রাইটার আমাকে বললো- তোমার ইনস্ট্রাকশনে যা আছে সেগুলো যদি আমি দুই হাজার শব্দের মধ্যে লিখে দিতে পারি, অসুবিধা আছে? প্রথমে বিষয়টা একটু খটকা লেগেছিলো। মহিলা অলস নাকি? বেশি লিখলেই তো বেশি টাকা পাবে। মানা করে ক্যান? পরে কী ভেবে বললাম, অসুবিধা নেই। মহিলা তাই করেছিলেন, এবং ফরচুনেটলি, ঐ আর্টিক্যাল গত ৭/৮ মাস যাবৎ পাঁচ হাজার ওয়ার্ড আর্টিক্যালের সাথে টেক্কা দিয়ে পজিশন এক এবং জিরোতে আছে।
টেবিল অব কনটেন্ট
টেবিল কনটেন্টটা আমার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় কারণ আমার বেশ কিছু সাইটের কনটেন্ট ফিচার স্নিপেটে আছে, এবং সেগুলোর বেশিরভাগই এই টেবিল অব কনটেন্ট থেকে টাকা পুল করেছে গুগল।
আমি সবসময়েই আমার আর্টিক্যালের জন্য কনটেন্ট টেবিল ম্যানুয়ালি ক্রিয়েট করি। অনেক হিসেব নিকেশ করে। অনেক সময় দিয়ে। কোনো প্লাগিন ইউজ করি না। অবশ্য আমি এমনিতেও প্লাগিন পছন্দ করি না। যে কাজ একটু চেষ্টা করলে, একটু গুগল করলেই করে ফেলা যায়, সেটার জন্য আমি সাইটে প্লাগিন ব্যবহার করতে পছন্দ করি না।
অন্যান্য
এছাড়াও আর্টিক্যালে কীওয়ার্ড ভ্যারিয়েশন, আর্টিক্যালে গ্রামাটিক্যাল সমস্যা এবং আই-রিলিজ আর্টিক্যাল আর রিচ আর্টিক্যাল দেয়া জরুরি।
উল্লেখ্য, আর্টিক্যালটার জন্য আরও কিছু অনপেজ পয়েন্ট নোট করেছিলাম। কিন্তু তাড়াহুড়োর কারণে সেগুলো এখন বাদ দিলাম। কথা দিচ্ছি, পরে সময় করে আর্টিক্যালটা আবার আপডেট করবো।
ওভারঅল মন্তব্য
আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি আর্টিক্যালটা আশানুরূপ সাজিয়ে, তথ্য দিয়ে লিখতে পারিনি বলে।
মূলত সময়ের অভাবে আর্টিক্যাল দিতে পারছি না সাইটে, এবং তাইজন্য গত তিনদিন অল্প অল্প করে সময় বের করে শেষ করলাম লেখাটা। আশা করি ভুল-ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। কোনো পরামর্শ থাকলে, কিছু এড করার থাকলে মন্তব্য করে জানাবেন আশা করি।
সবাই ভালো থাকুন।
হ্যাপি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং!